গণতান্ত্রিক উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রকৌশলীদের ভূমিকা

প্রকৌশলী এ. এন. এইচ. আখতার হোসেন
প্রধান উপদেষ্টা, এ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ।
সাবেক সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, ফেডারেশন অব ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনস অব সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়া (FEISCA)

শুরুতে বিগত ২০০৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও ফ্যাসিষ্ট হাসিনার আমলে, ২০০৭ হতে ৫ই আগষ্ট ২০২৪ পর্যন্ত যে সকল নেতাকর্মীকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য গুম ও খুন করা হয়েছে, সে সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। একই সময়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার জন্য যারা অকথ্য নির্যাতনের স্বীকার হয়ে জেলজুলুম ও পঙ্গুত্ববরণ করেছেন এবং আহত হয়েছেন তাদের প্রতিও জানাই আন্তরিক সমবেদনা।

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের ইতিহাস সুদীর্ঘ। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন আমল থেকে শুরু করে অধুনালুপ্ত পাকিস্তান এবং স্বাধীন বাংলাদেশে অসংখ্য নজির রয়েছে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে ১৯৪৬ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে ব্রিটিশরা ভারতকে দ্বিধাবিভক্ত করে এবং ভারত ও পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করে। অধুনালুপ্ত পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল তদানিন্তন বাংলার মুসলমানদের বিশেষকরে পূর্ববাংলার জনগণের। পাকিস্তান স্বাধীনহলেও পূর্বঅংশের জনগণের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনেনি। পাকিস্তান আমলে ১৯৪৮ সালে হতে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য নিরন্তর সংগ্রাম করতে হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলেও গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পাইনি। বরং শুরুতেই একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সংগ্রামের পরিনতিতে ১৯৭৫ সালের আগষ্টে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পরিবর্তন হয়। এতাদাসত্ত্বেও পরাজিত শক্তি তাদের পরাজয় মেনে নিতে চায়নি। বরং পুনরায় তাদের একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রকাশ্যে ও গোপনে ষড়যন্ত্র করতে থাকে, এর পরিনতিতে ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর একটি প্রতি বিপ্লবের ষড়যন্ত্র করে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হয়। তিনি শুরুতে এক দলীয় স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বিলুপ্তি ঘটান এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেন।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এক অনন্য নজীর স্থাপন করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে বিপুল ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জাতীয় সংসদে দুই তৃতীয়াংশের বেশী আসন পেয়ে গণতন্ত্রের পথে নবযাত্রা শুরু করেন।

১৯৮১ সালে দেশী ও বিদেশী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে নির্মমভাবে শহীদ করা হয়। সাংবিধানিক ভাবে তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং পরবর্তীতে বিপুল ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

১৯৮১ সালে জেনারেল এরশাদ ষড়যন্ত্র ও অভুত্থানের মাধ্যমে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করে নিজে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে তৎকালীন আওয়ামীলীগ প্রধান শেখ হাসিনা তাকে পরিপূর্ণ সমর্থন করেন। ১৯৮২ সাল থেকে শুরু করে ১৯৯০ পর্যন্ত এরশাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লাগাতার আন্দোলন হয়। ১৯৯০ সালের ছাত্র জনতা ও রাজনৈতিক দল সমূহের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে ৬ই ডিসেম্বর ১৯৯০ জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এ সময়ে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও তত্ত্বাবধায় সরকারের প্রধান হিসাবে বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করেন। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার গঠন করেন। তিনি অত্যান্ত দক্ষতা ও সততার সাথে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। এর পরবর্তী ইতিহাস দেশের জনগনের জানা আছে।

২০০৭ সালে জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করে ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারী কার্যত সেনাবাহিনীর একটি অংশ বিদেশী সহায়তায় আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় বসানোর চক্রান্ত করে। এই সময়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপি অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। বিএনপি’র নেতা জনাব তারেক রহমান এবং তার ভাই আরাফাত রহমানকেও গ্রেফতার করা হয়। তাদের দুই জনের উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। ২০০৮ একটি সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা তথা আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় বসানো হয়। তিনি দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেন।

যে কোন দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও তা স্থায়ী করার ক্ষেত্রে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিশেষ অবদান রাখে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পিত অবকাঠামোর নির্মাণ অত্যাবশ্যক। এ ছাড়াও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও প্রকৌশলীদের বিশেষ অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। দেশে কর্ম সংস্থান বৃদ্ধির জন্য অল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত জনগোষ্ঠিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষ জনশক্তি তৈরী অত্যাবশ্যক। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ব্যাপকভাবে স্থাপনের জন্য উদ্যোগ তৈরী ক্ষেত্রেও প্রকৌশলীরা অবদান রাখতে পারেন। সকল ধরনের অবকাঠামো পরিকল্পনা ও নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রকৌশলীদের অবদান অনস্বীকার্য।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যত উন্নয়ন অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে তাতে প্রকৌশলীরা মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে। বিএনপি রাষ্ট্র কাঠামো পূর্ণ নির্মাণে ঘোষিত ৩১ দফা পর্যালোচনা এবং সে আলোকে নিমোক্ত বিষয়গুলিতে প্রকৌশলীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

১। বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাত:-
২০২৫-এ বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ৩৯,৩২৪ মেগাওয়াট। সর্বোচ্চ উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ১৭০০০ মেগাওয়াট। দেশে গড় উৎপাদন প্রায় ১২০০০ মে:ও:। প্রতিদিন ২২,৩২৪ ২৭,৩২৪ মেগাওয়াটর উৎপাদন ক্ষমতা অলস বসিয়ে রাখতে হবে। এজন্য ক্যাপাসিটি চার্জ আরো বেড়ে যাবে। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ১.৫০ লক্ষ কোটি টাকা শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ প্রদান করতে হয়েছে। বর্তমানে স্থাপিত ক্ষমতার মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগ হল সরকারী খাতে স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্র আর বাকী ৬০ ভাগ হল ব্যক্তিখাতে। প্রায় ৭০% বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় ব্যক্তি এবং ৩০% বিদ্যুৎ উৎপাদিত সরকারী খাতে।

বেসরকারী খাতে স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে অধিক মূল্যে বিদ্যুৎ কেনার ফলে বিদ্যুৎ খাতে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ৬০০০০ কোটি টাকা এবং জ্বালানী খাতে ২০০০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়ার জন্য বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। ২০০৬ সালে Public Procurement Act লংঘন করে Energy Supply Act-2010 এর প্রণীত আইনের আওতায় অযাচিত প্রস্তাবের ভিত্তিতে ব্যক্তিখাতে ও যৌথ উদ্যোগে অপরিকল্পিতভাবে অসংখ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, যার কোন প্রয়োজন ছিলনা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অদ্যাবধি এ সকল অযাচিত প্রস্তাবের ভিত্তি নির্মিত প্রকল্পের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এখানে আরো উল্লেখযোগ্য হল, ভারতের আদানি পাওয়ারের সাথে তাদের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের জন্য যে চুক্তি করা হয়েছে তা একতরফা, অযৌক্তিক ও অসম চুক্তির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। জ্বালানী খাতে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল স্থানীয় গ্যাসভিত্তিক। অপরিকল্পিত ভাবে ব্যবহারের কারণে দেশীয় গ্যাস ভান্ডার দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে তা ফুরিয়ে যাবে। গ্যাস সংকট কমানোর লক্ষে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য যথেষ্ঠ উদ্যোগ না নিয়ে সাময়িকভাবে গ্যাস সংকট মোকাবেলায় স্বৈরাচারী সরকার ২০১৯ সাল থেকে LNG আমদানি শুরু করে। প্রথম FSRU তে আন্তর্জাতিক দরপত্রের ভিত্তিতে একটি মার্কিন কোম্পানির সাথে চুক্তি করা হয়।

২০২১ সালে দ্বিতীয় FSRU স্থাপনের জন্য অযাচিত প্রস্তাবের ভিত্তিতে সরকারের পছন্দনীয় একটি কোম্পানির সাথে চুক্তি করা হয়। দেশে মূল ভূমি এবং সমুদ্র বক্ষে গ্যাস প্রাপ্তির যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও গ্যাস অনুসন্ধান উত্তোলন এবং সঞ্চালনের ক্ষেত্রে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। অথচ আমদানিকৃত LNG সরবরাহের জন্য মাতারবাড়ী থেকে বাখরাবাদ ও ঢাকা পর্যন্ত নতুন পাইপ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। ভোলার শাহজীবাজারে যে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে তা থেকে সীমিত আকারে গ্যাস তোলা হচ্ছে। ঐ গ্যাসক্ষেত্র থেকে ব্যাপক আকারে গ্যাস উত্তোলন এবং তা সরবরাহের জন্য যে পাইপলাইন নির্মাণ করা দরকার, তার কোন লক্ষণ সরকারী পরিকল্পনায় নেই। দেশের ক্রমবর্ধমান গৃহস্থালি জ্বালানি সরবরাহের জন্য LPG গ্যাস ব্যাপকভাবে আমদানি করা হচ্ছে। সেখানে ১২.৫ কেজি গ্যাসের সিলিন্ডার প্রতি দাম যদিও BERC নির্ধারণ করে দেয়; অভিযোগ আছে যে নির্ধারিত দামের বাইরে অনেক বেশি মূল্যে গ্রাহকদের LPG সিলিন্ডার ক্রয় করতে হয়। এক্ষেত্রেও বিভিন্ন ধরনের দূর্নীতির অভিযোগ প্রায়ই প্রকাশিত হয়। জনস্বার্থে এটি নিয়ন্ত্রণ করা একান্ত প্রয়োজন। সরকার

মাতারবাড়ীতে একটি LPG টার্মিনাল স্থাপন করে পাইকারী ভিত্তিতে LPG ক্রয় করলে, তাতে দাম কম পড়বে এবং LPG এর দাম সহজেই নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব।

ভবিষ্যতে স্থানীয় গ্যাস যখন নিঃশেষ হয়ে যাবে, তখন গৃহস্থালী কাজের জন্য LPG হবে একমাত্র ভরসা। দেশে অশোধিত তৈল পরিশোধনের জন্য ১৯৬৮ সালে স্থাপন করা ১২ লক্ষ ব্যারেল ২য় অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন ২য় রিফাইনারী স্থাপনের লক্ষে বিভিন্ন স্বার্থন্বেশী সুবিধাভোগীদের চক্রান্তে বাস্তবায়ন করা যায়নি। ফলে প্রতিবছর ৬০ লক্ষ টন পরিশোধিত ডিজেল, পেট্রোল এবং হাইস্পীড ডিজেল এবং HFO আমদানী করতে হয়। প্রতিবছর এই আমদানীর পরিমান বাড়তে থাকবে, এমতাবস্থায় মাতাবাড়ীতে যেহেতু দেশের সবচেয়ে বড় গভীর সমুদ্র বন্দর হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিদিন একলক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তৈল পরিশোধনের ব্যবস্থা সম্পূর্ন রিফাইনারী নির্মাণ করা যেতে পারে। মাতারবাড়ীর সাথে সড়ক, রেল ও জলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপর করা বাঞ্চনীয়।

জলবায়ু দূষণের কারণে যেখানে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে, সেখানে স্বৈরাচারী সরকার নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ অর্জনের লক্ষে ২০,০০০ মে: ও: কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করে। ইতিমধ্যে ৮.৬৮২ মে: ও: স্থাপন করা হয়েছে। নবায়ন যোগ্য জ্বালানী বিশেষ করে সৌর ও বায়ুশক্তি লাভজনকভাবে ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি, কিন্তু তা করতে হবে। জ্বালানী দক্ষতা বৃদ্ধির বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করা একান্ত আবশ্যক।

২। বহুমুখী সমন্বিত যাতায়াত ব্যবস্থাপনাঃ-
সারা দেশে পণ্য, মালামাল ও যাত্রীবাহী পরিবহনের জন্য একটি সমন্বিত বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। এ জন্য রেল, সড়ক ও জলপথের উপর ভিত্তি করে একটি ব্যয় সাশ্রয়ী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। দেশে একদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে আভ্যন্তরীন উৎপাদন ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে উৎপাদিত পণ্য পরিবহন, সরবরাহ ও বিতরণের জন্য একটি দক্ষ বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এ ব্যাপারে সড়ক, রেলপথ ও জলপথ উন্নয়ন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সমন্বিত ও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা আবশ্যক।

ক. সড়ক যোগাযোগ: বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমরা লক্ষ্য করেছি যে বিভিন্ন সড়ক ও সেতু নির্মাণ কাজ বিনা টেন্ডারে অযাচিত প্রস্তাবের ভিত্তিতে সরকারের পছন্দসই দেশি-বিদেশি ঠিকাদারদের প্রদান করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্র লক্ষ্য করা যায় যে সড়ক ও সেতু নির্মাণের ব্যয় অত্যাধিক এবং বলা যায় যে তা বিশ্বে সর্বাধিক। এ ক্ষেত্র প্রয়োজনীয় গবেষণা ও উদ্যোগ গ্রহণ করার মাধ্যমে নির্মাণ ব্যায় অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। অপর একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ও অত্যধিক। এত অধিক ব্যয়ে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের পরও দেখা যায় যে, সড়কের স্থায়ীত্ব বেশি দিন থাকে না। কারণ এখানেও প্রচুর পরিমাণে দূর্ণীতি হয়। বিশেষ করে গ্রামীণ সড়কের ক্ষেত্র বেশি পরিমাণে অবহেলা পরিলক্ষিত হয়। ফলে টেকসই নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যায় কমিয়ে আনা একান্তভাবে প্রয়োজন। বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হয়। সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমানো সম্ভব। এজন্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা প্রয়োজন। বিশেষ করে সড়ক জনপথ ও রাস্তায় সিগন্যাল লাইট স্থাপন করা প্রয়োজন।

বর্তমানে সারা দেশব্যাপী সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে এদেশে সড়ক যোগাযোগ নতুন নয়। বিগত কয়েক দশক ধরে সারাদেশে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। জাতীয় সড়ক, মহাসড়ক, আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়ক ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্য।

খ. রেল যোগাযোগ: বৃটিশ ঔপনেবিশ শাসন আমলে রেল যোগাযোগ গড়ে তোলা হয়েছিল, তাদের শাসন ব্যবস্থা রক্ষার জন্য। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ আমলের প্রায় চল্লিশ বছর রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণভাবে অবহেলিত ছিল। বিগত স্বৈরাচারী শাসন আমলে নূতন রেল পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়। রেল পরিবহন ব্যয় সড়ক পরিবহন ব্যায়ের চেয়ে অনেক কম। দেশে ক্রমবর্ধমান যাত্রী যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যয় সাশ্রয়ী রেল চলাচল ব্যবস্থা গড়ে তোলা একান্তভাবে প্রয়োজন।

গ. জলপথ যোগাযোগ ব্যবস্থা: দেশে এক সময় অত্যন্ত সাশ্রয়ী পরিবহন ব্যবস্থা ছিল জলপথ পরিবহন। বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য সরবরাহ এবং জনগণের সাশ্রয়ী যাতায়াতের জন্য এ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। তখন দেশের সর্বত্র খাল, নদ-নদী ছিল। বিগত কয়েক দশকে নদ-নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় নৌ-পরিবহন ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়েছে। যথোপোযুক্ত সমীক্ষা চালিয়ে নৌপথ পরুদ্ধার করা প্রয়োজন।

৩। জলবায়ু ও পরিবেশ:
এটা অনস্বীকার্য যে জলবায়ু পরিবর্তনের যে বৈশ্বিক প্রভাব তা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি হবে বলে ধারণা করা যায়। জলবায়ু অভিঘাতের ফলে কোথাও কেথাও অতিবৃষ্টি আবার কোথাও কোথাও অনাবৃষ্টি দেখা দিতে পারে । সামুদ্রিক ঝড় ও জ্বলোচ্ছাস বাড়তে পারে। এর ফলে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার এক বৃহৎ অংশ লবনাক্ত পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ষাট এর দশকে সামুদ্রিক জ্বলোচ্ছাস থেকে উপকূলীয় এলাকায় কৃষিজমি ও বসতবাড়ি রক্ষার জন্য উপকূলীয় বাধ নির্মাণের ব্যাপক উদয়োগ গ্রহণ করা হয়।

যার ফলে উপকূলীয় এলাকায় ধানের ফলন, শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং জনগণের বসতি জ্বলোচ্ছাসে নিমজ্জিত হওয়া থেকে রক্ষা পায়। এজন্য প্রথমদিকে এর সুফল পাওয়া গেলেও ক্রমান্বয়ে এসব প্রকল্পের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যাপকভাবে লক্ষণীয়। এর প্রতিকার করা একান্ত প্রয়োজন। যদিও ইতিমধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর সহায়তায় কিছু পরীক্ষামূলক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং কিছু সমীক্ষা কাজ চলমান আছে- এতদস্বত্ত্বেও বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের তেমন সুবিধা পরিলক্ষিত হয়নি।

৪। পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনাঃ
বাংলাদেশের প্রধান প্রধান নদ নদীর জল প্রবাহ ভারতের উপর নির্ভরশীল। ইতিমধ্যে ভারত গঙ্গা নদীর উপর ফারাক্কা বাঁধ, তিস্তা নদীর উপর গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করেছে। এছাড়াও ছোট ছোট অনেক নদীর উপর বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করে উজানে অব্যাহতভাবে পানি প্রত্যাহার করছে। এর ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল, যা প্রধানত গঙ্গার পানি প্রবাহের উপর নির্ভরশীল, সেসব এলাকায় বাংলাদেশের যেসব নদ নদী আছে তা প্রায়ই পানিশূন্য হয়ে যায়। এর ফলে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে নদ নদীর পানিতে এমনকি ভূগর্ভের পানিতেও লবনাক্ততার পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবন প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত করছে এর ফলে দেশের উত্তর পশ্চিাঞ্চলে মরুকরণ প্রক্রিয়া লক্ষ্যনীয়।

এ ব্যাপারে একটি বিষয় বিশেষভাবে প্রনিধানযোগ্য যে, ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত গঙ্গা পানি চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হয়ে যাবে। পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়োজন।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশে বন্যার প্রকোপ কমানো এবং শুকনা মৌসুমে পানি প্রাপ্তির জন্য খাল খনন কর্মসূচী শুরু করেন। কিন্তু পরবর্তীকালে সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে এই প্রকল্পগুলি হয় বন্ধ করে দেওয়া হয় অথবা ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনা হয়। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার লোক দেখানোর জন্য বিভিন্ন জায়গায় নদী খনন কর্মসূচী ও নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য অত্যধিক ব্যয়ে প্রচুর প্রকল্প গ্রহণ করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে এসব প্রকল্প থেকে কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যায়নি বরং এসব প্রকল্পে ব্যাপক হারে দূর্ণীতি হয়েছে। লুটপাট হয়েছে জনগণের টাকা। নদী ও খাল খনন কর্মসূচী নিয়ে বড় ধরনের সমীক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম আশু গ্রহণ করা দরকার- যার ফলে নদী, খাল খনন এবং নদীর তীর সংরক্ষণে সাশ্রয়ী মূল্যে প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা যায়।

৫। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, যানজট ও জলাবদ্ধতাঃ
সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে অপরিকল্পিত নগরায়ণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে সকল মহানগর, শহর ও নূতুনভাবে গড়ে ওঠা শহরে ব্যাপক যানজট, মাঝারি ও বড় আকারে বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে আমাদের ইতিহাস বলে যে, প্রতিটি নগর ও শহরে অতীতে জলাবদ্ধতা দেখা যেত না। এ সমস্যা সম্পকে সমীক্ষা চালিয়ে যথাযাথ সমাধান বের করা প্রয়োজন। যখন ঢাকা মহানগরে উড়াল সড়ক ও ক্রসিং নির্মিত হয়, তখন সবাই প্রত্যাশা করেছিল যে, যানজট সমস্যার সমাধান হবে, বাস্তবে তা হয়নি। সাম্প্রতিককালে বিদ্যুৎ চালিত রিকশা ও ত্রিচক্রযান ঢাকা মহানগর সহ ইতোমধ্যে মহানগর ও শহরে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি করছে। সরকার এ পর্যন্ত বিদ্যুৎ চালিত রিকশা ও ক্রিচক্রযানের রেজিষ্টেশন, চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স প্রদানের কোন ব্যবস্থা করেনি। ফলে সমস্যা আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। মহানগরীতে র‍্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম বা মেট্রো রেলের ব্যাপক সম্ভাবনা বিদ্যমান। ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগরে একটি মেট্রো লাইন স্থাপনের সুবিধা সর্বজন বিধিত। ঢাকা মহানগরীতে আরো কয়েকটি মেট্রো লাইন নির্মিত হলে, মহানগরীর যাতায়াত ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে। এছাড়াও অন্যান্য মহানগরীতেও মেট্রো রেল স্থাপনের সম্ভাবনা যাচাই করা প্রয়োজন। বিভিন্ন নগর ও শহরে গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা একান্ত অপরিহার্য।

৬। দেশে কৃষি প্রযুক্তি বিপ্লব ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিঃ
কৃষি খাতে প্রযুক্তি উন্নয়নের যথেষ্ঠ সম্ভাবনা বিদ্যমান। কৃষিতে যন্ত্রায়ন করা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। এ জন্য যান্ত্রিক লাঙ্গল ও কম্বাইন্ড হারভেস্টার উৎপাদনের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় উদ্যেগে কল-কারখানা নির্মাণে সরকার ব্যাপক সহযোগিতা প্রদান করতে পারে।

৭। শস্য, শাক-সবজি ও ফলমুল সংরক্ষণ করার আধুনিক পদ্ধতি প্রবর্তন:
বিশ্বখাদ্য সংস্থা পরিচালিত একটি সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে, বাংলাদেশের উৎপাদিত ফল ও শাক-সবজি শতকরা পঞ্চাশ ভাগ যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে নস্ট হয়। এ জন্য শাক-সবজি ও ফল উৎপাদনকারী এলাকায় প্রতিটি ইউনিয়নে ছোট আকারে কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ করা যেতে পারে। স্থানীয় প্রযুক্তিগত জ্ঞানের ভিত্তিতে বেসরকারীভাবে এ সকল কোল্ড স্টোরেজ স্বল্প ব্যয়ে নির্মাণ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে প্রকৌশলীরা উল্লেখ যোগ্য ভুমিকা পালন করতে পারে।

৮। তথ্য প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তাঃ
বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় ফাইভার অপটিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ফলে প্রতিটি ইউনিয়ন/উপজেলা ভিত্তিতে ইন্টারনেট সেবা সম্প্রসারণ করা সম্ভব। এ কাজে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে বেসরকারীখাতে কয়েক হাজার শিক্ষিত ও স্বল্প শিক্ষিত জনবল নিয়োগ করা যেতে পারে। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (ICT এবং AI) যেভাবে বিকাশ লাভ করছে, তাতে বাংলাদেশের বিশেষ করে শহর ও গ্রামীণ এলাকা কার্যকরভাবে সংযুক্ত করা যেতে পারে। যার ফলে ICT এবং AI থেকে জ্ঞান ব্যবহারের মাধ্যমে বেকার সমস্যার সমাধান ও বৈদেশিক অর্থ উর্পাজনও সম্ভব।

৯। Blue Economy বা নীল অর্থনীতির বিকাশঃ
বাংলাদেশ সমুদ্র সম্পদ আহরণে যথেষ্ঠ পেছনে পড়ে আছে। নিকটস্থ সমুদ্রে মৎস আহরণ এবং কিছু গ্যাস কূপ থেকে গ্যাস আহরণ ছাড়া অন্য কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সমুদ্র স্রোত ও জোয়ার ভাটাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। অগভীর সমুদ্রে বায়ু বিদ্যুৎ আহরণের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ও সমুদ্রে প্রচুর খনিজ সম্পদে বিদ্যমান। নীল অর্থনীতি থেকে সম্পদ আহরণের জন্য আমাদের ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। এ জন্য প্রয়োজন হবে উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তির, যা প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানীরা প্রয়োগ করতে পারেন।

১০। প্রকৌশল বিভাগ ও সংস্থার ব্যবস্থাপনাঃ
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে বিভিন্ন প্রকৌশল বিভাগ ও সংস্থা মূলতঃ প্রকৌশলীদের দ্বারা পরিচালিত হতো। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রকৌশল বিভাগ ও সংস্থার ব্যবস্থাপনা ও নীতি নির্ধারনী কাজে আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন প্রকৌশল বিভাগ ও সংস্থার অভ্যান্তরীন নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভাগ ও সংস্থায় প্রকৌশলীদের ক্ষমতা সংকুচিত করে আনা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকৌশল ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগও আমলাতন্ত্র কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। প্রকৌশল বিজ্ঞান বিকাশের স্বার্থে আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রন সম্পূর্ণ বন্ধ করা প্রয়োজন। প্রকৌশলী বিভাগ ও সংস্থার সকল নিয়োগ পদোন্নতি মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে করা প্রয়োজন।

What's your reaction?
1Cool0Upset1Love0Lol
to top