দেশের অগ্রগতিতে যুব সমাজের ভূমিকা আজকের দিনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা যুবসমাজ এক অমূল্য সম্পদ, যার উদ্দীপনা, সৃজনশীলতা, উদ্ভাবনী চিন্তা এবং অদম্য সাহস জাতির অগ্রগতির মূল ভিত্তি। যে দেশ তার তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ, সৃজনশীল ও আত্মনির্ভর করে তুলতে পারে, সেই দেশ দ্রুত উন্নতির পথে এগিয়ে যায়। তরুণ প্রজন্মের শক্তি, উদ্ভাবনী চিন্তা এবং সাহস দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে নতুন দিগন্তে পৌঁছে দিতে পারে।
আজকের তরুণরাই আগামী দিনের নেতা, উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা এবং সমাজ পরিবর্তনের রূপকার। বাংলাদেশের মতো উদীয়মান দেশে তরুণরা দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। দেশের জনসংখ্যার বিশাল অংশ শিক্ষিত, সচেতন এবং নতুন চিন্তাধারায় বিশ্বাসী তরুণদের নিয়ে গঠিত। তারা শুধু শিক্ষিত নয়, বরং নতুন ধারার উদ্ভাবন, সামাজিক উদ্যোগ, প্রযুক্তি গ্রহণ এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বাস্তবায়নে সক্ষম। তাই রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতিটি স্তরে তাদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি। এই প্রজন্মকে সঠিক দিকনির্দেশনা ও সহায়তা না দিলে দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি সীমিত হতে পারে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের মতে, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা, আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণ ছাড়া তরুণ প্রজন্মকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তরুণ উদ্যোক্তাদের বৈদেশিক আয় দেশে আনার জন্য পেপ্যাল, স্ট্রাইপ, ওয়াইজের মতো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উভয়েরই দায়িত্ব তরুণদের পাশে থাকা। উদ্যোক্তা সহায়তা, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং গ্রামীণ পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি। শুধুমাত্র শহরের নয়, গ্রামের তরুণ শক্তিকেও দক্ষভাবে ব্যবহার করলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন আরও সুদৃঢ় হবে। এই ধরনের উদ্যোগ তরুণদের আত্মনির্ভরতা বাড়াবে, সৃজনশীল উদ্যোগকে উৎসাহিত করবে এবং দেশের অর্থনীতিতে স্থায়ী প্রভাব ফেলবে।
যখন তরুণ শক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো হবে, তারা দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ হয়ে উঠবে। তাদের উদ্ভাবনী শক্তি, দক্ষতা এবং সাহস দেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে। এই প্রজন্ম শুধু দেশের ভবিষ্যত নয়, বরং দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মূল ভিত্তি।
প্রকৌশলীরা এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তারা তরুণদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, নতুন উদ্যোগ তৈরি করতে এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সহায়তা করতে পারে। নতুন সফটওয়্যার, প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রকৌশলীরা দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের শক্তি আরও দৃঢ় করতে পারেন।
তরুণদের শক্তি কাজে লাগাতে হলে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, প্রকৌশলীদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে এবং শহর ও গ্রামের সব পর্যায়ে সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এগুলো নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশ দ্রুত অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাবে এবং আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে।
লেখক: প্রকৌশলী রূপম রাজ্জাক